গত বছর গুলোতে আলোচনার ঝড় তোলা ভারতের বেশ কটি সিরিয়ালের মধ্যে 'কিরনমালা' অন্যতম, দেশ ছাড়িয়ে বিদেশী পত্রিকাতেও চান্স পেয়েছিল, সিরিয়ালগুলোকে নিয়ে গড়়ে ওঠা বাস্তব কিছু চিত্র, যেমন পাখির প্রেমে প্রান বিসর্জন,খুন মামলা, ঝগড়া, আত্মহত্যা, অশান্তি ইত্যাদি শিরোনামে জ্বলে উঠত সংবাদগুলো হেড়লাইন,যাই হোক, আপনারাই বেশি ভালো জানেন,এগুলো বন্ধের জন্য হয়েছে মিসিল মিটিং,
অন্ধের মতই সব কিছুই চলেছে,
কিন্ত আজ সিরিয়াল গুলোর একটির পতন হতে চলেছে... জানিনা আবার কোন সিরিয়াল কাল হয়ে আসবে বাংলার জন্য
শেষ হল কিরণমালা! সমাজে যে ৫টি ‘অবদান’ রাখল এই মহাসিরিয়াল...
শাঁওলি | নভেম্বর ২১, ২০১৬
গত শনিবার শেষ এপিসোডটি টেলিকাস্ট হয়েছে। ছুটি পেয়েছেন কিরণমালা, রানি কটকটি ও তাঁর চটপটি সাঙ্গপাঙ্গরা। কিন্তু এই দু’বছরে বাংলা তথা ভারতে কম অবদান রাখেনি এই বিচিত্র ধারাবাহিক!
কিরণমালার সামাজিক অবদান!
ফ্যান্টাসি ব্যাপারটাই এমন যে তা সব বয়সের মানুষকেই টানে। কিন্তু তা বলে ফ্যান্টাসির মাথামুণ্ডু তো থাকতে হয়। হ্যারি পটারও ফ্যান্টাসি, টোয়ালাইট সিরিজও ফ্যান্টাসি। দ্বিতীয়টি বরং আবার বাস্তবঘেঁষা। কিন্তু এইসব বিদেশী ফ্যান্টাসি সিরিজকে কম টেক্কা দেয়নি বাংলার জনপ্রিয় লোককাহিনির আদ্যন্ত পিণ্ডি চটকানো, গল্পের গরুকে গ্যালাক্সিতে পাঠানো বাংলার ‘কিরণমালা’। উন্মাদের মতো মেকআপ, অভিনয়ের অ-হীন হুঙ্কার নয়তো গলগল কান্নাকাটি আর পিছনে অ্যামেচার কুৎসিত গ্রাফিক্সের ব্যাকড্রপ— ‘কিরণমালা’ চলেছে টানা ২ বছর ৩ মাস। আর এই সময়কালে সমাজে প্রচুর ‘অবদান’ রেখে গিয়েছে এই ধারাবাহিক। তার মধ্যে ফিরে দেখা প্রধান ৫টি—
১. এই ধারাবাহিকের প্রথম এবং সবচেয়ে বড় অবদান এই যে শিশু-কিশোর-ইয়ং অ্যাডাল্টদের মন থেকে বাংলার জনপ্রিয় মূল লোককাহিনিটি চিরতরে মুছে দেওয়া। রানি কটকটি-বোমচিকা গ্রহ, কিরণমালার ছানাপোনা এইসব যে মূল গল্পের ধারেকাছেও ছিল না, সে কথা আজকের বইবিমুখ জেনারেশন কোনওদিন জানতে পারবে কি না সন্দেহ।
২. যুক্তিবু্দ্ধিসম্পন্ন-ভাল সিনেমা দেখা-সাহিত্য পড়া একশ্রেণির দর্শকও ‘কিরণমালা’ দেখতে বসতেন প্রাণ খুলে, পেট ফাটা হাসি হাসতে। সাম্প্রতিক সময়ে হাসি বড় দুর্লভ জিনিস। এই ধারাবাহিক বছরের পর বছর বহু মানুষকে হাসিয়েছে। এর চেয়ে বড় অবদান কী হতে পারে?
৩. গত বছর বাংলাদেশে ‘কিরণমালা’ সালোয়ার-কামিজ ঢালাও বিক্রি হয়েছে ইদের বাজারে। ‘মিনা’ বা ‘টিনা’ নাম দিয়ে কালেকশন লঞ্চ করলে বিক্রিবাটা কতটা কী হতো বলা যায় না। কিন্তু যেহেতু ট্যাগ রয়েছে ‘কিরণমালা’, তাই বিক্রি ভাল হয়েছে বলে ঘটনাটির উল্লেখ করে ঢাকার একাধিক সংবাদমাধ্যম। তাই বলতেই হয় যে, শুধুই মনোরঞ্জন নয়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও একটি উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে এই ধারাবাহিক।
আরও পড়ুন
ধারাবাহিক সংঘর্ষে বাংলাদেশে আহত ২০০
৪. বাংলাদেশে কিরণমালার জনপ্রিয়তা ঢাকা ছাড়িয়ে চট্টগ্রামের পাহাড়েও গিয়ে পৌঁছেছিল। এ বছর এপ্রিলে ‘দ্য ডেইলি স্টার’-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয় যে সেখানকার বাজারে বিজু উৎসবের সময় শোনা গিয়েছিল এক মিষ্টি মহিলা কণ্ঠ— ‘কিরণমালা মিষ্টি আলু লউ’, অর্থাৎ ‘কিরণমালা’ মিষ্টি আলু নিয়ে যান সবাই। পরে জানা যায়, ধারাবাহিকের কিরণমালাকে সেখানকার লোকজনের অত্যন্ত মিষ্টি লাগে বলেই তিনি মিষ্টি আলুর নাম রেখেছিলেন কিরণমালা। কিরণমালার চরিত্রাভিনেত্রী রুকমা রায়ের কানে এই খবরটি পৌঁছেছিল কি না তা অবশ্য জানা নেই। রূপকথার রাজকন্যা থেকে ‘মিষ্টি আলু’— কিরণমালার এই মেটামরফসিস ঘটত না, যদি না ধারাবাহিকটি তৈরি হতো।
৫. গত অগস্ট মাসে ‘কিরণমালা’ ধারাবাহিকের গল্প কোন ট্র্যাকে বইবে, এই নিয়ে দু’দল দর্শকদের মধ্যে তর্কাতর্কি শেষ পর্যন্ত রক্তারক্তি-দাঙ্গাহাঙ্গামায় পরিণত হয়। ঘটনাটি ঘটে বাংলাদেশের হবিবগঞ্জের ঢোলগ্রামে। এই খবরটি মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়। আন্তর্জাতিক ইংরেজি সংবাদমাধ্যম তো বটেই, ইউরোপের অন্যান্য দেশের সংবাদমাধ্যমও এই নিয়ে প্রতিবেদন লেখে। সংবাদমাধ্যমে এমন অবদান এদেশের ক’টি ধারাবাহিক রাখতে পেরেছে??
আপনার বিজ্ঞাপন প্রচার করুন
Ashrafpur.com এ সারা পৃথিবীকে জানাবো আমরা
email বা ফেইসবুকেIbna Ibadat
0 Reviews:
Post Your Review